** *খাজাঞ্চিবাবু* **
--- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
শব্দার্থ - (Word meaning) :
=====================
ফায়ার ব্রিকস (fire bricks) - ফায়ার ক্লে (fire clay) নামক খনিজ উপাদান দ্বারা গঠিত উচ্চতাপ সহনশীল ইঁট।
খাপড়া - অর্ধগোলাকৃতি টালি। (pan tile)।
উদ্বৃত্ত - অতিরিক্ত।
স্লেভারি (slavery) - দাসত্ব।
খাজাঞ্চি - অফিসের কোষাধ্যক্ষ (cashier)।
ভাউচার (voucher) - টাকা প্রদানের আদেশনামা।
পেমেন্ট (payment) - বকেয়া টাকা প্রদান।
মেস - dormitory, বহু কর্মচারীর একসঙ্গে থাকার স্থান।
বিব্রত - অপ্রস্তুত।
অ্যাকাউন্টেন্ট - হিসাবরক্ষক।
রিটায়ার - কর্মজীবন থেকে অবসর। উদ্দ্গীরিত -উগরে দেওয়া।
বিলুপ্ত - বিলীন, শেষ হওয়া।
প্রাতঃকাল - ভোরবেলা, সকাল।
ভোঁ - siren, সাইরেন।
উদ্বৃত্ত - residual, excess, অবশিষ্ট, অতিরিক্ত, বাড়তি।
বন্দোবস্ত - arrangement, আয়োজন।
অনুপস্থিত - absent, গরহাজির।
সার্ভেয়ার (surveyer) - নিরীক্ষক।
হাঁপ - দম, দীর্ঘশ্বাস।
কিলেন (kiln) - furnace, ভাটি, চুল্লী।
তক্তপোষ - bed, বড় চৌকি।
শিয়র - শয়নকারীর মাথা রাখার স্থান।
বেয়ারা - orderly, peon, বাহক, পিওন।
পাই - এক আনার ১২ ভাগের ১ ভাগ। (তিন পাই = ১ পাইস), ১ টাকার ১/১৯২ ভাগ।
=প্রশ্ন-উত্তর=
Q: "খাজাঞ্চিবাবু" গল্প অবলম্বনে খাজাঞ্চিবাবুর চরিত্রটি বিশ্লেষণ কর। (5) [150 words]
গল্পকার তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের একজন শক্তিশালী লেখক। তিনি গল্প ও উপন্যাস (novel) সাহিত্যের এই দুই শাখাতেই ছিলেন সব্যসাচীর মতো ক্ষমতাসম্পন্ন। সমাজের শোষক ও শোষিত শ্রেণীটিকে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন নিজে জমিদার বংশের সন্তান হওয়ার সুবাদে। সমাজের নানান চরিত্র তার গল্পের বুননে নিখুঁতভাবে তুলে ধরে বৈষম্যের এক কঠোর বাস্তব রূপ।
আলোচ্য গল্প "খাজাঞ্চিবাবু" গল্পে আমরা দেখি কারখানার মালিক ও ম্যানেজারের প্রভুসুলভ নির্দয় ও ধূর্ত রূপ। অন্যদিকে শ্রমিক শ্রেণীর দাসত্বের বাধ্য জীবন। মালিক শ্রেণীর সহযোগী হয়ে তোষামোদ করেও বিশেষ লাভ হয় না বঞ্চিত শোষিত শ্রেণীর মানুষদের।
খাজাঞ্চিবাবু বাবু সারা জীবন সর্বদা কারখানায় মালিকের লাভের কথা ভেবে গিয়েছেন। তাই তাকে দেখা যায় কারখানা শুরুর সময়ের আগে ভোঁ বাজিয়ে শ্রমিকদের অসুবিধায় ফেলে দিয়ে কাজে ডেকে নিতে। তিনি নিজেকে সর্বদা মালিকের অনুগত প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। এমনকি ম্যানেজার স্বয়ং টাকা খরচ করার নির্দেশ দিলেও তিনি আবার সেই নির্দেশ ম্যানেজারের ঘরে গিয়ে মিলিয়ে নেন। তাই বলে খাজাঞ্চিবাবু নিজেকে কখনোই মালিকপক্ষের দাস ভাবেননি। তাই নতুন ম্যানেজার তার ঘরের আসবাবপত্র স্থান পরিবর্তন করলে তিনি রেগে গিয়েছেন, বিরক্ত হয়েছেন। তার চরিত্রটি একটু সহজ সরল গ্রামীণ। আসলে তিনি মালিক ও ম্যানেজারের বন্ধুই ভেবে গিয়েছেন নিজেকে। কারখানাকেই তার জীবন ভাবতে গিয়ে তিনি ভুলেই গিয়েছেন যে কারখানার অন্যান্য শ্রমিকদের থেকে তিনি আলাদা নন। মালিক শ্রেণী তাকে অন্যান্য শ্রমিকদের মতই-- একই নজরে দেখে। প্রয়োজন হলে তাকেও যে মালিকপক্ষ কাজ থেকে ছাঁটাই করতে পারে এ কথা তিনি বিস্মৃত হয়েছিলেন। ফলে নতুন ম্যানেজার তাকে যখন বৃদ্ধ বয়সের অজুহাতে অবসর গ্রহণের নির্দেশ দিলেন তখন তার চোখে শুধু কালো ধোঁয়া। মালিকের প্রতি তার সারা জীবনের বিশ্বাস ও আনুগত্যের আকাশ সে ধোঁয়ায় ভরে যায়। নতুন চশমা যেভাবে তার চোখের দৃষ্টিকে খুলে দিল তেমনি নতুন ম্যানেজারও তাকে বুঝিয়ে দিল মালিক ও তার শ্রেণী এক নয়।